সামাজিক মিডিয়ার নেতিবাচক প্রভাব: তরুণ মা-বাবা ও ইসলামের দৃষ্টিকোণ

বর্তমান যুগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, যেমন ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম, আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। তরুণ মা-বাবারাও এর বাইরে নন। তবে, এই মাধ্যমগুলো যেমন আমাদের জীবন সহজ করেছে, তেমনি সঠিক ব্যবহার না করলে এটি পরিবার এবং সন্তানদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে এটি কীভাবে প্রভাব ফেলে, তা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করব।

সামাজিক মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার এর ক্ষতি

তরুণ মা-বাবা প্রায়ই ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করেন, যা তাদের পারিবারিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন:

  • সন্তানদের প্রতি অবহেলা: সন্তানদের সময় দেওয়ার পরিবর্তে যদি মা-বাবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মগ্ন থাকেন, তবে সন্তানের মানসিক এবং সামাজিক উন্নয়ন ব্যাহত হতে পারে।
  • পরিবারে দূরত্ব সৃষ্টি: পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের পরিবর্তে ভার্চুয়াল জগতে সময় কাটানোর ফলে ঘনিষ্ঠতা এবং ভালোবাসার বন্ধন দুর্বল হতে পারে।
  • অতিরিক্ত প্রদর্শনপ্রবণতা: ব্যক্তিগত জীবনের ছবি বা ঘটনা সামাজিক মিডিয়ায় শেয়ার করার ফলে রিয়া (প্রদর্শনের মনোভাব) তৈরি হতে পারে, যা ইসলামি শিক্ষার পরিপন্থী।

ইসলামের নির্দেশনা

  • ইসলাম আমাদের সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে এবং প্রতিটি কাজে ভারসাম্য বজায় রাখতে নির্দেশনা দেয়। মহান আল্লাহ বলেন:
  • এবং অপচয় করো না। নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই।
    (সূরা আলইসরা: ২৭)
  • সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা সময়ের অপচয় হিসেবে গণ্য হতে পারে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
  • তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।
    (সহিহ বোখারি মুসলিম)
  • সন্তানদের প্রতি মা-বাবার দায়িত্ব অবহেলা করা ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে গুনাহ।

সামাজিক মিডিয়ার ব্যবহার সম্পর্কে ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে করণীয়

১. সময়ের সঠিক ব্যবহার: দৈনন্দিন জীবনে সামাজিক মিডিয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন এবং সেই সময়ের বাইরে তা ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
২. সন্তানদের সময় দিন: সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটান, তাদের সঙ্গে আলোচনা করুন এবং তাদের মানসিক বিকাশে মনোযোগ দিন।
৩. প্রদর্শন থেকে বিরত থাকুন: ব্যক্তিগত জীবন সামাজিক মাধ্যমে প্রদর্শন করা থেকে বিরত থাকুন। মহান আল্লাহ বলেন:

যে ব্যক্তি অহংকার রিয়া থেকে বাঁচে, সে মুক্তি লাভ করে।

উপসংহার

সামাজিক মিডিয়া সঠিকভাবে ব্যবহার করলে এটি আমাদের জীবনের একটি উপকারী অংশ হতে পারে। তবে অতিরিক্ত এবং অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে এটি পারিবারিক সম্পর্ক এবং সন্তানের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ইসলাম আমাদের ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপনের শিক্ষা দেয়। তাই, তরুণ মা-বাবাদের উচিত সামাজিক মিডিয়ার ব্যবহার সীমিত রাখা এবং পরিবারে শান্তি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখা।

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

  1. ইসলামি জ্ঞান অর্জন করুন: সামাজিক মিডিয়ার পরিবর্তে ইসলামি বই পড়া, লেকচার শোনা বা পরিবার নিয়ে ইসলামি আলোচনা করতে উৎসাহিত করুন।

3 thoughts on “সামাজিক মিডিয়ার নেতিবাচক প্রভাব: তরুণ মা-বাবা ও ইসলামের দৃষ্টিকোণ

  1. اعتراض به نتایج آزمون ورودی مدارس تیزهوشان، پس از
    اعلام نتایج آزمون ورودی
    مدارس تیزهوشان، دانش‌آموزانی که می
    خواهند نسبت به اعتراض به نتایج آزمون ورودی مدارس تیزهوشان اقدام نمایند، می‌توانند از طریق سامانه مای مدیو به نشانی my.medu.ir اقدام
    به ثبت اعتراض نمایند.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *