তোমাদের ধন-সম্পত্তি ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফিল না করে…..

اللَّهَ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُلْهِكُمْ أَمْوَالُكُمْ وَلَا أَوْلَادُكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ ۚ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَٰلِكَ فَأُو۟لَـٰئِكَ هُمُ ٱلْخَـٰسِرُونَ

বাংলা অনুবাদ:
“হে মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পত্তি ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফিল না করে। যারা এ কারণে গাফিল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।” (সূরা আল-মুনাফিকুন: ৯)

এই আয়াতের মূল বার্তা:

এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুমিনদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা দিচ্ছেন—পার্থিব ধন-সম্পদ এবং সন্তান-সন্ততি যেন আল্লাহর স্মরণ থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন না করে। অর্থাৎ, পার্থিব ব্যস্ততা ও মোহ যেন দীনদারি ও আল্লাহর ইবাদত থেকে গাফেল হওয়ার কারণ না হয়।

১. আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না হওয়া:

  • ধন-সম্পদ সন্তান-সন্ততি মানুষের জন্য আল্লাহর দান, কিন্তু এগুলোই যদি আল্লাহর স্মরণ থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে দেয়, তবে তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
  • দুনিয়ার জীবনের সব কিছুই পরীক্ষার অংশ, বিশেষ করে ধন-সম্পদ ও পরিবার। এগুলো ব্যবহারে ভারসাম্য না থাকলে, মানুষ আল্লাহর স্মরণ ভুলে গিয়ে কেবল পার্থিব সুখের পেছনে ছুটতে পারে।
  • বাস্তবে অনেক মানুষ ধন-সম্পদের মোহে পড়ে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ ভুলে যায়, হারাম পথে উপার্জন করে, নামাজ-কোরআন থেকে দূরে থাকে—এটাই সবচেয়ে বড় ক্ষতি।

২. প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কারা?

  • যারা দুনিয়ার মোহে পড়ে আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে সরে যায়, তারা মূলত পরকালীন জীবনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
  • পার্থিব সম্পদ ও পরিবার শেষ পর্যন্ত ফানা হয়ে যাবে, কিন্তু আখিরাতের জীবন চিরস্থায়ী।
  • আল্লাহ বলেন:
    দুনিয়ার জীবন তো কেবল খেলাধুলা আনন্দ-বিনোদন মাত্র, আর আখিরাতই প্রকৃত জীবন—যদি তারা জানত!” (সূরা আল-আঙ্কাবুত: ৬৪)

এই আয়াতের শিক্ষা:

1. ধন-সম্পদ সন্তান-সন্ততিকে আল্লাহর অনুগ্রহ হিসেবে দেখা:

2.সন্তান সম্পদ যেন দীন থেকে দূরে সরিয়ে না দেয়:

  • অনেক সময় সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ার নামে মানুষ হারাম পথে সম্পদ উপার্জন করে
  • আবার ধন-সম্পদের প্রতি আসক্ত হয়ে অনেকে ইবাদতে অলসতা করে।
  • এসবই আমাদের আখিরাতের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

উপসংহার:

এই আয়াত আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয় যে, দুনিয়ার মোহ আমাদের যেন আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। প্রকৃত সফলতা হলো দুনিয়া ও আখিরাতের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা—অর্থাৎ, দুনিয়াতে পরিশ্রম করা, কিন্তু আখিরাতের প্রস্তুতিও নেওয়া। তাই আমাদের উচিত সম্পদ ও পরিবারকে আল্লাহর নির্দেশ মেনে পরিচালনা করা এবং সর্বদা তাঁর স্মরণে থাকার চেষ্টা করা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *